ভবিষ্যত নিধির
কর বিতর্কে সরকার পিছু হটেছে। অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ তৈরী করে, মেরুকরণের হাজার
চেষ্টা সত্ত্বেও জনগনকে কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না। সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাতাসে ছড়ানোর
পরেও জনগনের নাভিশ্বাস উঠছে না। দেশপ্রেমের ধুয়ো তুলেও ছাঁচ-বন্দী ‘দেশপ্রেমী’
বানানো গেল না। শেষমেশ মুদ্রাস্ফীতির হার কমেছে, এই অজুহাতে
ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে সুদের হার এক ঝটকায় অনেকটা কমিয়ে জনগনের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের
পালটা ছোবল মেরেছে।
জনসংখ্যার
সিংহভাগ এখনো গরিব আর মধ্যবিত্ত। তাই একটাই উপায়। হাতে নয়, ভাতে মারার চেষ্টা। জনসাধারনের
দুইখানা দোষ। বিবেকটাকে খাঁচায় পোরে না আর সততা এঁটুলির মতো গায়ে লেগে থাকে। ইতিহাস
বলে,
জনগনের হাত-পা গজালে পৃথিবীর কোন রাজা, সরকার
নাকি গদিতে ‘ফেভিকল’ সেঁটেও টেঁকে না। সেদিন বাস্তিল দুর্গও গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। এখন মধ্যপ্রাচ্যে
সূর্যোদয় হচ্ছে।
পেটে গামছা বেঁধে খিদে সামলানো জনগনকেই খাওয়ার লোভ দেখানো যায়। দু’ টাকার চাল আর এক টাকায় গমের স্বপ্ন যতদিন বাঁচিয়ে রাখা যাবে ততদিন নিশ্চিতে রাজ্যপাট সামলানো সহজ। কব্জিশুদ্ধু ফ্যান-ভাতে ডোবানো থাকলে, মুষ্টিবদ্ধ হাত আকাশে ছোঁড়া যায় না। সেটা শাসকের থেকে বেশী কেউ বোঝে কি!
তাই জনগনের সারাজীবন
ধরে জমানো ‘ব্যাঙের আধুলিগুলো’ থেকে সম্মানের সাথে বাঁচার ন্যূনতম রসদটুকুর
দিকে কু-নজর না দিলেই হচ্ছিল না। আসলে দৈত্যাকার ব্যাঙ্ক, বীমা
কোম্পানী আর শিল্পপতিদের সংসারে বড্ড টানাটানি চলছে। কিভাবে? ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের প্রকল্পগুলিতে সুদ অল্প বেশী। তাই ব্যাঙ্কের মহাজনি
ব্যবসা মার খাচ্ছে। জনগনের টাকা আমানত না পেলে ব্যাঙ্কগুলো ঋণের বকলমে রাঘববোয়ালদের
দান-খয়রাতি করবে কি করে? এদিকে ঋণ নিয়ে, ফুর্তি লুটে,
ব্যবসায় লালবাতি জ্বালিয়ে মাছরাঙারা ফুড়ুৎ। অন্যদিকে সরকার দু-চারটে
চুনোমাছকে জেলে পুরে দেশে-বিদেশে পেশী-আস্ফালন করবেন। কালো-টাকার হাত ভেঙ্গে ফেলো,
গুঁড়িয়ে ফেলো। চেনা ঢং, চেনা বুলি, অচেনা শুধু মুখোশগুলো।
তবে কলিকালেও
সেই নর-নারায়নই ভরসা। শুধু অপেক্ষা, কখন তারা “দুই-পা ফেলিয়া” পথে এসে দাঁড়াবেন আর মুখোশের আড়ালে মুখগুলোকে ঠিকঠাক চিনতে পারবেন।
২টি মন্তব্য:
Anek din agei Rabi Thakur bole gechhen... "Bojhha tar bhari hole, dubbe torikhan" ... tori dubuk na chaileo, pal-e haoa ta sathik dike choluk...
Apnar lekha ti bhisan bhabei contemporary ... apnake abhinandan
Chaliye jao !
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন