বেশ কিছুদিন ধরে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছেন! যত বেশী
সরকারী হাসপাতাল চালু হচ্ছে, খবরের কাগজে বেসরকারী হাসপাতাল আর
নার্সিংহোমের বিজ্ঞাপনের সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে বেড়েই চলেছে। অনেকে অজানা অনেক
নতুন নতুন রোগের খবর জানাচ্ছেন। কেউ কেউ বিনামূল্যে উপদেশ দিচ্ছেন। কেউ আবার শরীরে
মারাত্মক ক্ষতবিক্ষত ছবি সহ ভয় দেখাতে শুরু করেছেন। রক্ত, থুতু
থেকে শুরু করে হৃৎপিন্ড, ফুসফুস, নাক,
চোখ, গলা সবসুদ্ধু বারবার পরীক্ষা করাতে
বলছেন। আর তা না হলে? আপনার এই রোগটি হবে, ওই অঙ্গটি বাদ
যাবে কিংবা সেই অঙ্গটি পচে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এখানে পরীক্ষা করালে ২০% ছাড়।
একটি অঙ্গের পরীক্ষা করানোর পরে দ্বিতীয় অঙ্গের পরীক্ষায় ৫০% ছাড় পাবেন। আরো কত
কি।
মনে হয় না হটাৎ করে বেসরকারী হাসপাতাল আর নার্সিংহোমগুলি এত জনদরদী কিংবা মানবদরদী হয়ে গেল কেন? লাখ-লাখ টাকা খরচ করে দেশের বহুল প্রচারিত খবরের কাগজের পাতার পর পাতা জুড়ে প্রতিদিন বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। শুধুই কি আমার-আপনার ভালোর কথা ভেবে?
মনে হয় না হটাৎ করে বেসরকারী হাসপাতাল আর নার্সিংহোমগুলি এত জনদরদী কিংবা মানবদরদী হয়ে গেল কেন? লাখ-লাখ টাকা খরচ করে দেশের বহুল প্রচারিত খবরের কাগজের পাতার পর পাতা জুড়ে প্রতিদিন বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। শুধুই কি আমার-আপনার ভালোর কথা ভেবে?
আপনি বলবেন, হাসালেন বৎস। যতই
মধুবাক্য বর্ষিত হোক সে গুড়ে অনেক বালি। সরকারী কিছু বিধিনিষেধের জোরে বেশ কিছুদিন
হলো টিভিতে ওষুধের বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়েছে। অতি উত্তম। এদিকে জনগণ নিজের নিজের জেলায়
বিনামূল্যে সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসা, ওষুধ, পরীক্ষা পেলে ট্যাঁকের কড়ি ফেলে বেসরকারী হাসপাতালে যাবে কেন? সবাই জানে তাই মানে।
যত চকচকে নার্সিংহোম, তত বেশী বেশী পরীক্ষা-নিরিক্ষা করতে বলে। পেটখারাপ হলে ফুসফুসের এক্স-রে। ফুস্কুড়ি হলে এম-আর-আই। নাক দিয়ে জল পড়ছে? ওরে বাবা, আপনার তো এক্ষুণি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করতে হবে। মৃত রোগীকে আই-সি-ইউতে ফেলে রেখে চিকিৎসার বিল বাড়াবে কিংবা হাসপাতালের তোয়ালের দাম আপনার “ফুল অ্যান্ড ফাইনাল সেটেলমেন্ট” বিলের সাথে জুড়ে গেল। যতই আপনি রেগে গিয়ে চিড়বিড় করুন না কেন, কীর্তিমান কর্তাদের উদ্ভাবনী চিন্তার প্রশংসা আপনাকে করতেই হবে।
আসলে ব্যাপারখানা এই যে, ওনাদের এখন সময় বিশেষ ভালো যাচ্ছে না। হাসপাতালের ক্যাশ কাউন্টারের সামনে বার বার ঝাঁট দেওয়া সত্ত্বেও বেশী পদধূলি পাওয়া যাচ্ছে না। তাতে ঝাঁটা-বালতির খরচ কমছে ঠিকই কিন্তু দিনের শেষে মালিকের পকেট ভরছে না। এ এক বিষম চিন্তার বিষয়।
আবার গোদের উপর বিষফোঁড়া। সরকার ৩৪৪টি ওষুধ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কয়েকশো জীবনদায়ী ওষুধের দাম একধাক্কায় কমিয়ে দিয়েছেন। এই খবরগুলোর ওজন কিন্তু বেশ ভারী ছিল কিন্তু পৃথিবীশুদ্ধু দাপিয়ে বেড়ানো লাগামহীন অর্থ আর প্রবল ক্ষমতাশালী ‘ওষুধ প্রস্তুতকারী’ সংস্থাগুলোর চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে কাগজের এককোণায় খবরটুকু ছাপানো হয়েছিল। অশ্বথামা হত ইতি গজঃ। খবরও বেরোল, অথচ আপনার চোখেও পড়ল না। তা বেশ, তা বেশ! তবু ওষুধ কোম্পানীগুলোর লাভ কমেছে, দালাল স্ট্রীটে শেয়ারের দাম কমেছে। সব মিলিয়ে হাতে হ্যারিকেন।
যত চকচকে নার্সিংহোম, তত বেশী বেশী পরীক্ষা-নিরিক্ষা করতে বলে। পেটখারাপ হলে ফুসফুসের এক্স-রে। ফুস্কুড়ি হলে এম-আর-আই। নাক দিয়ে জল পড়ছে? ওরে বাবা, আপনার তো এক্ষুণি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করতে হবে। মৃত রোগীকে আই-সি-ইউতে ফেলে রেখে চিকিৎসার বিল বাড়াবে কিংবা হাসপাতালের তোয়ালের দাম আপনার “ফুল অ্যান্ড ফাইনাল সেটেলমেন্ট” বিলের সাথে জুড়ে গেল। যতই আপনি রেগে গিয়ে চিড়বিড় করুন না কেন, কীর্তিমান কর্তাদের উদ্ভাবনী চিন্তার প্রশংসা আপনাকে করতেই হবে।
আসলে ব্যাপারখানা এই যে, ওনাদের এখন সময় বিশেষ ভালো যাচ্ছে না। হাসপাতালের ক্যাশ কাউন্টারের সামনে বার বার ঝাঁট দেওয়া সত্ত্বেও বেশী পদধূলি পাওয়া যাচ্ছে না। তাতে ঝাঁটা-বালতির খরচ কমছে ঠিকই কিন্তু দিনের শেষে মালিকের পকেট ভরছে না। এ এক বিষম চিন্তার বিষয়।
তার উপর বামদেব, সামদেবরা জুটেছেন। তাঁদের উপদেশ মেনে আপনি পার্কে গিয়ে সকাল-বিকেল হাঁটছেন। টিভির সামনে বসে ঘাড় বেঁকিয়ে, হাত-পা ছুঁড়ে ব্যায়াম-প্রাণায়াম করছেন। এদিকে সরকার বাহাদুর রেস্তোঁরার খাবারে আরো বেশী পরিসেবা কর বসিয়েছে। বেশ করেছেন। দেশের উন্নতি করতে হবে না! আপনিও তাই তেল-ঝাল-মশলা ছেড়ে ঘরে পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছেন। ন্যুডলস, পাঁউরুটিতে কিসব অখাদ্য-কুখাদ্য মেশানো হচ্ছে ( রসায়নবিদ্যায় বড্ড কাঁচা ছিলাম, বড় বড় নামধাম মনে রাখতে পারি না, তাই বলতে পারলুম না)। সকাল-বিকেল জিমে-সাঁতারে গিয়ে আপনার ওজন কমছে। অফিসে বসের রক্তচক্ষু দেখেও রক্তে কোন চাপ নেই। বেশ খুশিতে আছেন, হা-হা, হো-হো করে হাসছেন, বিন্দাস জীবন। জানেন কি, এদিকে দৈত্যাকৃতি কর্পোরেট হাসপাতালগুলোর হর্তাকর্তা বাবুদের মুখ শুকিয়ে আমসি হয়ে যাচ্ছে।
আবার গোদের উপর বিষফোঁড়া। সরকার ৩৪৪টি ওষুধ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কয়েকশো জীবনদায়ী ওষুধের দাম একধাক্কায় কমিয়ে দিয়েছেন। এই খবরগুলোর ওজন কিন্তু বেশ ভারী ছিল কিন্তু পৃথিবীশুদ্ধু দাপিয়ে বেড়ানো লাগামহীন অর্থ আর প্রবল ক্ষমতাশালী ‘ওষুধ প্রস্তুতকারী’ সংস্থাগুলোর চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে কাগজের এককোণায় খবরটুকু ছাপানো হয়েছিল। অশ্বথামা হত ইতি গজঃ। খবরও বেরোল, অথচ আপনার চোখেও পড়ল না। তা বেশ, তা বেশ! তবু ওষুধ কোম্পানীগুলোর লাভ কমেছে, দালাল স্ট্রীটে শেয়ারের দাম কমেছে। সব মিলিয়ে হাতে হ্যারিকেন।
তাই ডাক্তারের বিনা পরামর্শে ‘মুড়ি-মুড়কির’ মতো ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস ছাড়লেই ভালো। অসাবধানে খেয়ে ফেলা একটিমাত্র “ভেজাল” ওষুধের গুগলি জীবনের উইকেটটি তুলে নিতে পারে যে কোন সময়। তাই ওষুধ কেনার আগে ‘নিষিদ্ধ ওষুধের’ ফর্দটায় একবার চোখ বুলিয়ে নিতে এবারেও কি ভুলে যাবেন?
ও হো! আরেকটা কথা বলতে বেমালুম ভুলে যাচ্ছিলাম। কয়েকদিন ধরে খবরের কাগজে যা সব খবর বেরোচ্ছে, পিলে চমকে যাওয়ার মতো। বিশেষ করে যাঁরা সদ্য কিছুদিন হলো অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশন করিয়েছেন কিংবা করাবেন বলে ভাবছেন, তাহলে সাধু সাবধান! যাঁরা ইতিমধ্যে অপারেশন করিয়ে ফেলেছেন, তাঁদের যত তাড়াতাড়ি পারা যায় আরো একবার হাসপাতালে যেতে হতেই পারে। আপনার দু’টো কিডনিই ঠিক ঠিক আছে কি না দেখতে হবে তো! আর যাঁরা অপারেশন করাবেন ভাবছেন, রাগ করবেন না, আপনাকে অজ্ঞান করিয়ে অপারেশন হয়ে যাবার পর মনে করে দু’টো কিডনিসহ বাড়ি ফিরবেন।
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আনন্দে থাকুন। আবার কি চাই!!!
1 টি মন্তব্য:
আমরা পুলিশ দেখলে এড়িয়ে চলি ( বলে পুলিশে ছুলে একশ ঘা) , অথচ এরাই রক্ষক । উকিল দেখলে ছিন্নবস্ত্র পরে যাই, পাছে সব কণ্ডা গড়ি বেরিয়ে
যায় , অথচ এরা নাকি সত্যের পক্ষে । আসলে আমরা নির্ঝঞ্ঝাট শান্তিপূর্ণ জীবন খুজি । এবার হাসপাতালেও নিস্তার নেই - এবার অন্য মরার জায়গা খুজতে
হবে ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন