বিকেলের সূর্যটা পশ্চিম আকাশের এক কোণায় গিয়ে আটকে আছে। হরিহর সেই ডুবন্ত
সূর্যের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করতে থাকলেন কখন আলো নিভে আসে। আজকাল সূর্যের আলো তাঁর
আর সহ্য হয় না। ভোরের আলো ফোটার আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন সাইকেলটা নিয়ে। পাক্কা
তিন ক্রোশ সাইকেল চালিয়ে যখন ডাকঘরে পৌঁছন তখন পরিষ্কার ঝকঝকে সকাল। হরিহর তড়িঘড়ি সাইকেল
থেকে নেমে, অন্য কেউ তাঁকে লক্ষ্য করার আগেই, সোজা চলে যান পোস্টমাস্টারের জন্য নির্দিষ্ট
ঘরে। ষাট ওয়াটের একটা বাল্ব লাগানো আধা-অন্ধকার কুঠুরিতে সেই যে তিনি ঢুকে পড়েন,
আবার সূর্য পশ্চিমে না ঢলে পড়া পর্যন্ত চৌকাঠ পেরিয়ে বাইরে আসবেন না।
তবে আজ তিনি একটু আগেভাগেই পোস্টঅফিস থেকে বেরিয়েছেন। সূর্যটা সামনের টিলার চূড়া
থেকে টুক্ পড়ে অদৃশ্য না হয়ে যাওয়া পর্যন্ত শিমুল গাছটার নিচে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন।
এই পাহাড়ী পথে, যেখান দিয়ে লোকে সাইকেলে যেতে পারে, সেই পথে লোকজন বিশেষ হেঁটে যাওয়া-আসা
করে না। পাহাড়ের গা ঘেঁষে পায়ে চলার রাস্তা করে নিয়েছে। সূর্য ডুবে যাওয়া মাত্রই
অন্ধকারের কালো ওড়নাটা যেন পাহাড়ী জঙ্গুলে পথটাকে মূহুর্তেই