চুলের ক্লিপ অথবা সরকারি কাঁকড়া

মেয়েটা যখন খুব ছোট্ট ছিল, তখন ওর মা স্কুল থেকে ফিরলেই মেয়েটা মায়ের ব্যবহৃত সব জিনিস নিয়ে খেলা করার জন্য হামলে পড়ত। ওর মা তখন বাড়িতে ফিরেই তড়িঘড়ি ব্যস্ত হয়ে মেয়ের জন্য খাবার বানানোর জন্য রান্নাঘরে। এদিকে মেয়ে ততক্ষণে বিছানায় ফেলে যাওয়া শাড়িটা জড়িয়ে বসে আছে। কোনদিন কপাল থেকে খুলে রাখা টিপটা নিজের কপালে লাগিয়েছে কিংবা স্কুলের ব্যাগ হাতড়ে ঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে ফেলেছে খাতা, পেন্সিল, ডাইরি, ক্লিপ আর আরো কত খুঁটিনাটি জিনিসপত্র

পুতুলনাচ


সবাই তো আর খারাপ নয়, কেউ কেউ খারাপ -এইসব সোহাগী কথাবার্তার দিন বোধহয় শেষ। নারদকান্ডের ভিডিওতে এতগুলো মন্ত্রী-সাংসদ-পুলিশ থুতু লাগিয়ে টাকা গুনে গুনে নিল, সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবার পরও সরকার আর পুলিশ কিছুতেই দেখতে পেল না। সবাই ভেবেছিল, সাধারণ মানুষের আর বিরোধী দলের অভিযোগ থানায় জমা পড়লে যা ভবিতব্য হয় এবারেও তাই হবে। অভিযোগ জমা পড়লেই “নীলরঙা” পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে থানা চত্বরের ধুলো মাখিয়ে সেই অভিযোগপত্রের কাগজগুলিকে কোথায় যে রেখে দেবে, সেগুলো নাগিনার নায়িকাও খুঁজে পাবে না। তবে সিবিআইয়ের পাল্লায় পড়ে তেনাদের এখন নিয়মিত দপ্তরে গিয়ে ধর্ণা দিতে হচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগঃ কোথায় এসে আমরা দাঁড়িয়েছি?


প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবার কয়েকদিন পরেই একটি মর্মান্তিক খবর আমরা সবাই পড়েছি দক্ষিণ দিনাজপুরের এক শিক্ষকের চাকরি প্রার্থী, যিনি নিজেই একটি রাজনৈতিক দলের একজন সদস্য, তবু কয়েক লক্ষ টাকা নাকি দিয়েছিলেন স্কুলের চাকরি জোগাড় করার জন্য বলাবাহুল্য টাকাটি তিনি কাউকে দান করেন নি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পাবার জন্য ঘুষ দিয়েছিলেন ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার ব্যাপারটা আজকাল হামেশাই শোনা যায় অমুক চাকরির জন্য এত টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে, তমুক আধিকারিক ঘুষ নিতে গিয়ে বামাল ধরা পড়েছেন মাঝে মাঝেই কাগজে রেল-দপ্তরের বিজ্ঞাপনও দেখা যায় কেউ যেন মনে না করেন ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়া যায় ইত্যাদি, ইত্যাদি যদিও কোনটা যে সত্যি সেটা এখন আর কাউকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হয় না
এটা কোন অবিশ্বাস্য খবর নয় যে কেউ কেউ ঘুষ দিয়ে চাকরি পান কোন কোন ক্ষেত্রে সঠিক পাদপদ্মে নৈবেদ্য পৌঁছে দিতে পারলেই নাকি চাকরি পাওয়া যায় সে সরকারি কিংবা বেসরকারি - সব ক্ষেত্রেই হয় সরকারি ব্যাপারে লোকে একটু বেশী উদ্বেল কিংবা উত্তেজিত হয়ে পড়েন কারণ জনসাধারণের ধারণা সরকারি টাকা জনগণের টাকা তাই সরকারি চাকরিতে সবারই নীতিগতভাবে সমান অধিকার কেউ ঘুষ দিয়ে পেয়ে গেলে গাত্রদাহ হবারই কথা। বেসরকারি চাকরি পাওয়ার জন্যও লোকে ঘুষ দেয় তবু সেটা নিয়ে লোকে মাথা ঘামায় না যেন বেসরকারি ক্ষেত্রে যারা ঘুষ নেয় কিংবা দেয় তারা কেউ চরিত্রহীন নয় বেসরকারি টাকায় কি তবে ন্যায়-নীতির বালাই নেই!